1. nazmulrj40@gmail.com : md nazmul : md nazmul
  2. mizansatkhirapress@gmail.com : Satkhira Barta : Satkhira Barta
  3. tasahmed7@gmail.com : satkhira barta : satkhira barta
  4. shohaghassan0912@gamil.com : মোহনা নিউজ : মোহনা নিউজ
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

আসছে শীত, খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সাতক্ষীরার গাছিরা।

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২
  • ২২২ Time View

আসছে শীত, খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সাতক্ষীরার গাছিরা।

 

তরিকুল ইসলাম (তারেক) খুলনা ব্যুরো

ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। বৈচিত্রপূর্ণ ছয়টি ঋতুর দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একটি বৈশিষ্ট্য। ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা। সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পূবালি বাতাসে অপরুপ সৌন্দর্যে সকলের মন মাতিয়ে তুলছে মিষ্টি খেজুর রসের ঘ্রাণ। কাক ডাকা ভোরে রস সংগ্রহ ও সন্ধ্যায় চলছে গাছ পরিচর্যার কার্যক্রম। এবার কিছুটা আগেই সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায় প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত।

আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য কলারোয়া উপজেলা এক সময় খ্যাতি ছিল। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।

কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীণ জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে

এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন।

যার সাধ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন অবশ্যই সে কথা নতুন প্রজন্মের কাছে রূপকথা মনে হলেও বাস্তব। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। এ গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা। এ ছাড়া খেজুরর পাতা দিয়ে আর্কষণীয় ও মজবুত পাটি তৈরি হয়। এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার। কিন্তু জয়বায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন জেলা ও উপজেলা জুড়ে বিলুপ্তির পথে।

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা থেকে আসা গাছি রুসতম ও শওকাত তার সহকর্মীরা জানান, আমরা পেশাগত কারণে প্রায় প্রতি বছরেই কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গল ঝাড়া গ্রামের হযরত আলী এর জমিতে তাবু গেড়ে ওই এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে ৪ মাসের জন্য গাছ ভেদে ৫ থেকে ৭ কেজি করে খেজুরের গুড় দিয়ে গাছগুলো আমরা নেই।

চাহিদা মত খেজুর গাছ না পাওয়ার কারণে রস কম হওয়ায় আশানুরুপ গুড় তৈরি করতে পাড়ি না। তারপরও এবছর প্রায় ২ শ’টির বেশি খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করেছি। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে জীবন-জীবিকার জন্য এই পেশা ধরে রেখেছি।

তবে যে ভাবে খেজুর গাছ কাটা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই এই এলাকায় আর আমাদের ব্যবসা হবে না। বর্তমান বাজারে আখের গুড় চিনি যে মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে তার চেয়ে মানসম্পন্ন খেজুরের গুড়ের দাম এবছর কিছুটা বেশি হবে এমনটাই আশা করছেন গাছিরা। শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে আত্মীয়-স্বজন আনা নেয়া ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয় সে পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারি না। তবুও পেশাগত কারণে চালিয়ে যাচ্ছি এই ব্যবসা।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা গন জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে।

এদিকে উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

প্রধান উপদেষ্টা

মো: মোশারফ হোসেন
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd