জাকির হোসেন
নিয়ামতপুর(নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার অমৃতপুর, মহারাজপুর, কুতুবপুর, পীরপুর, কোঁচপাড়া ও মানপুর মৌজায় বসুন্ধরা গ্রুপের নাম ভাঙিয়ে তিন ফসলী জমি আমমোক্তার দলিল করে নিচ্ছে অসাধু একটি চক্র। এতে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ওই মৌজায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ওই ৭ টি মৌজায় সোলার প্যানেল নির্মাণ ও টগি এগ্রো ফার্ম করার জন্য ১ হাজার একর জমি কিনতে উপজেলা সদরে বসুন্ধরা গ্রুপের নামে একটি অফিস খোলা হয়েছে। ওই অফিসে টাঙানো হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের দুটি ব্যানার। প্রতিদিন সেই অফিসের ১০-১৫ জন স্টাফের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ৮০ থেকে ১০০ জন দালাল। আর এই দালালদের প্রলোভনে দিশেহারা হয়ে পড়ছে ওই এলাকার জমির মালিক।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই সমস্ত এলাকায় পৈত্রিক বসতবাড়ি ও তিন ফসলী জমি বিক্রি না করতে গ্রামে গ্রামে চলছে আলোচনা সভা। ওই মৌজার ৪০০ শতাধিক জমির মালিক গণস্বাক্ষর করে জমি বিক্রি করবে না বলে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন।
অমৃতপুর গ্রামের জামিনুর ইসলাম বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের নাম করে এলাকায় দালালরা এসে প্রলোভন দেখিয়ে জমি বিক্রির জন্য এক ধরনের চাপ তৈরি করছে। এলাকার একজনকে তারা টার্গেট করছে। শর্ত অনুযায়ী জমি কিনে দিতে পারলে দামী মোটরসাইকেল ও মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ওই দালালেরা। উপায় না দেখে গ্রামের মানুষ একজোট হয়ে আলোচনা করছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
পানিহারা গ্রামের রুবেল হোসেন বলেন, অমৃতপুরে আমাদের ৭ বিঘা জমি রয়েছে। এই জমি নিতে তারা উঠেপড়ে লেগেছে। তাছাড়া যে সমস্ত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলমান রয়েছে সে জায়গাগুলোও তারা ক্রয় করে নিচ্ছে। এতে বিবাদ আরও প্রকট হবে বলে জানান তিনি।
রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোত্তালিব হোসেন বাবর বলেন, আমাদের এ অঞ্চলের জমিতে ৩টি ফসল হয়। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩ ফসলী জমি নষ্ট করে কোন কোম্পানির কাছে এ জমি হস্তান্তর বা বিক্রি করা হবে না। বসুন্ধরা গ্রুপের এ কার্যক্রমকে আমি সমর্থন করিনা।
বসুন্ধরা গ্রুপের জমি ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পের অনুমোদন এখনো হয়নি। অনুমোদনের আগে পাওয়ার অব অ্যাক্ট অনুযায়ী আমমোক্তার দলিল করে কিছু জমি ক্রয় করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply