ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে কলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেতৃত্ব বাছাইয়ে ভুল করবে না উপজেলা বাসি এবার!

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

আগামী ২৯ মে ২০২৪ তৃতীয় ধাপে কলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে । প্রার্থীরা তাদের সাধ্যমত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন জায়গা প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। হাটে- বাজারে,পাড়া -মহল্লায়, গ্রামে-গঞ্জে, চায়ের দোকানে, মাঠে- ঘাটে সর্বত্র আলোচনা উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কারা আসছেন আগামী দিনের নেতৃত্বে এমন গুঞ্জন সর্বত্র। স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন সরব আলোচনা দীর্ঘদিন দেখেননি উপজেলাবাসি।সবার মনে কাজ করছে এক চাপা উত্তেজনা।
পুরাতন মুখের পাশাপাশি কয়েকজন নতুন প্রার্থী ঘুরে ফিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তাদেরকে বলতে শোনা যায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। ভোটাধিকার প্রয়োগে এবার তাদের নিজস্ব বুদ্ধি- বিবেচনা কাজে লাগাতে চান। কোন প্রকার চাপে বা আবেগের বশবর্তী না হয়ে, লোক দেখানো আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতির কথা মালায় না ভুলে উপজেলাবাসি এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।উপজেলার সঠিক নেতৃত্বে বাছাইয়ে তারা এবার ভুল করতে চান না। ভোটাররা এবার দারুন ভাবে কৌশলী।
এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যেহেতু এবার কোন দলীয় প্রতীককে নির্বাচন হচ্ছে না, অনেকের দলীয় পরিচয় থাকলেও তারা কৌশলগত কারণে প্রকাশ্যে এ বিষয়গুলো নিয়ে আসছেন না। চেয়ারম্যান পদে জনাব আনারুল ইসলাম (মোটরসাইকেল প্রতীক) জনাব আমিনুল ইসলাম লাল্টু (ঘোড়া প্রতীক) এবং জনাব এস এম আলতাফ হোসেন লাল্টু (আনারস প্রতীক) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জনাব আমিনুল ইসলাম লালটু গত মেয়াদে চেয়ারম্যান ছিলেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত, এদিকে আর একজন প্রার্থী স্থানীয় আওয়ামী সমর্থিত জনাব এস এম আলতাফ হোসেন লাল্টু সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ছিলেন। অপরদিকে নতুন মুখ ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জনাব আনারুল ইসলাম তরুণ উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সমাজ সেবক হিসেবে ইতোমধ্যে উপজেলাবাসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বিএনপি জামায়াত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ধারাবাহিক ভোট বর্জন কর্মসূচির মধ্যে হতে যাচ্ছে এই উপজেলা নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায় প্রথম ধাপের নির্বাচনে মাত্র ৩৬. ১ শতাংশ ভোট পড়েছে।আর দ্বিতীয় ধাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিব উল আউয়ালের বক্তব্যে ৩০ শতাংশের একটু বেশি ভোট পড়ার কথা জানানো হয়েছে। আর এক বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার মো: আলমগীর জানান ভোটের হার যাই হোক না কেন বৈধতা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। তবে স্থানীয় সুধীমহলের ভাষ্যমতে ভোটার উপস্থিতিতে কলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবার নতুন মাত্রা সংযোজন করবে। হেলাতলা ইউনিয়নের এক সাধারণ ভোটার বলেন,অনেক তো দেখলাম এবার একটু নতুন কিছু দেখতে চাই, নতুন নেতৃত্ব। দমদম বাজারের মালেক নামের একজন বয়ো বৃদ্ধ ব্যক্তি বলেন, নতুন এক প্রার্থী আনারুল ইসলামের নাম শুনেছি। তার নাম মানুষের মুখে মুখে, মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা, করেছেন, উচ্চশিক্ষিত। তাকে ভোট দিলে উপজেলার উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি। এদিকে আরেকজন শিক্ষক বলেন, জনাব আনারুল ইসলাম ইতোমধ্যে যুবসমাজের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জনাব আনারুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি জনগণের কাছে গিয়েছি, তাদের চাওয়া পাওয়ার কথা শুনেছি, নির্বাচিত হলে আমি প্রাণপণে মানুষের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করব। তিনি আরো বলেন, আধুনিক নাগরিক সেবা প্রদান,শিক্ষা ও প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, মাদক মুক্ত সমাজ গঠন, শিক্ষার প্রসার বৃদ্ধি, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা, সকলের জন্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সন্ত্রাস মুক্ত এবং অবকাঠামোতে সমৃদ্ধ কলারোয়া উপজেলা বিনির্মাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকব। উপজেলার উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন এমন কয়েকজন বলেন, দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের এই অবহেলিত জনপদ কলারোয়া উপজেলা। বিগত দিনগুলোতে কাঙ্খিত মাত্রায় উপজেলাটির উন্নয়ন হয়নি। তাই আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সঠিক, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে ভুল করবে না এবার উপজেলাবাসি।
উল্লেখ্য, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে শেখ ইমরান হোসেন (তালা প্রতীক), মফিজুল ইসলাম লাভলু (উড়োজাহাজ প্রতীক), জাহিদুর রহমান খান চৌধুরী (মাইক প্রতীক), এবং আশিকুর রহমান মুন্না (বই প্রতীক) নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শাহনাজ নাজনীন খুকু (হাঁস প্রতীক) এবং সেলিনা আনোয়ার ময়না (কলস প্রতীক) নিয়ে লড়ছেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এ শান্তি পূর্ণ করতে তারা সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জনাব মুরাদ হোসেন বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাবৃন্দের প্রশিক্ষণ চলমান। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত পরিবেশে নির্বাচন আয়োজন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।