উন্নয়ন ও নারী সমাজ সোনালী দে

উন্নয়ন ও নারী সমাজ
সোনালী দে
মানুষের মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে সভ্যতার সংস্পর্শে। সভ্যতাই মানুষকে সুন্দর ও প্রেমবান করে তোলে ।অন্যায় ,অপকর্ম ও নিষ্ঠুরতাকে পরিহার করতে শেখায়। উপভোগ সংস্কৃতি মানব সভ্যতার সার্থক রূপ দান করেছে । অর্থাৎ বলা চলে উপভোগ সংস্কৃতি বা সঞ্চারি রসের প্রভাব-ই সভ্যতার পূর্ব শর্ত । সভ্যতাই সংকীর্ণ জীবন থেকে বৃহৎ জীবনের দিকে পা বাড়ানোর নিশ্চয়তা দান করে।
২১ শতকের জয়যাত্রায় যারা অংশ নিয়েছে ,যারা মহাবিশ্ব জয় করেছে, নব নব আবিষ্কারে অবদান রেখেছে তারা উপভোগ সংস্কৃতির মানুষ । সঙ্গীত আর নৃত্যের তালে তাল মিলিয়ে তারা জয় করেছে সমুদ্র থেকে মহাকাশ । এ বিশ্ব সভ্যতার অগ্রযাত্রায় নারীদের পুরুষের সমকক্ষ হতে হবে।পুরুষের প্রেরণা হয়ে তাদের পাশে থেকে সাহস যোগাবে, সহযোগিতা করবে এটাই কাম্য । আমাদের সমাজের নারীরা পলাতক। তারা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ, উন্নত জীবন ভাবনা থেকে অনেক দূরে তাদের অবস্থান । নারীকে পুরুষের সমকক্ষ হতে হলে তাদের বন্দী জীবন দশা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। উন্নত জীবন ভাবনা সঞ্চালনের মাধ্যমে প্রেম আর সৌন্দর্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে। এ সত্যকে স্বীকার করতেই হবে যে, যেখানে মিশে যাওয়ার আনন্দ আছে সেখানেই মুক্তি আর যেখানে মেখে যাওয়ার ভয় সেখানেই প্রতিবন্ধক। তাই মেখে যাওয়ার ভয় কে প্রতিহত করে মিশে যাওয়ার আনন্দ উপভোগের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে পারি, প্রতিষ্ঠা করতে পারি আমাদের উন্নয়ন ।
ভোগ সংস্কৃতি আমাদের নারী ও পুরুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে। ভোগ সংস্কৃতির মানুষের অন্তরে আছে মেখে যাওয়ার ভীতি তাই তারা মিশে যেতে পারে না আর সে কারণেই তাদের মুক্তির পথ রুদ্ধ ।
মিশে যাওয়ার জন্য রূপ বা শরীরকে অতিক্রম করতে হবে । যা রূপ বা শরীরকে অতিক্রম করে তাই প্রেম। আর শরীর সম্পর্কিত যা তাই ভোগ। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীর সতীত্ব দেহে তাই ভোগ সংস্কৃতির মেখে যাওয়ার সংশয় তাদের বন্দি করে রাখে । আর পুরুষের সতীত্ব মনে তাই উপভোগ সংস্কৃতির দুর্বার গতির কারণেই নারীর তুলনায় পুরুষ বেশি গতিশীল। তাই যেখানে মেখে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেখানে পর্দা প্রথা কঠোরভাবে মানা দরকার আর যেখানে মিশে যাওয়ার আনন্দ সেখানে পর্দা প্রথার প্রয়োজন নেই। পরিশেষে বলি উপভোগ সংস্কৃতিতে পর্দা প্রথা নয়,পর্দা প্রথা থাকুক মেখে যাওয়া ভোগ সংস্কৃতিতে।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *