ক্যাসিনো সাঈদের পাচার করা অর্থ সন্ধান

ক্যাসিনো সাঈদের পাচার কর অর্থ সন্ধান

ছালেম বিন নুর
বিশেষ প্রতিনিধি

মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোতে জুয়ার আসরে ছিল তার সরব উপস্থিতি। অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচার করে মজতেন জুয়া-ক্যাসিনোর নেশায়। শুধু বিদেশে নয় রাজধানীর কয়েকটি ক্লাবেও বসিয়েছিলেন জুয়ার আসর। এরপর কে এম মমিনুল হক সাঈদ থেকে হয়ে গেলেন ‘ক্যাসিনো সাঈদ’।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বরখাস্ত হওয়া সেই কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ওরফে ক্যাসিনো সাঈদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের বিভিন্ন সময়ে ৭২ হাজার ৭১৯ সিঙ্গাপুর ডলার ও ৬৮ হাজার ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত পাচার করেছেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ অর্ধকোটি টাকার বেশি। যদিও ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অর্থের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা দুদকের।
সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার পাচারকরা অর্থ ফিরে পেতে এরই মধ্যে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা (মহাপরিচালক) ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দুদক নিশ্চিত হয়েছে যে মমিনুল হক সাঈদ অবৈধভাবে অর্জিত টাকা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া পাচার করে ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। যে কারণে কমিশন থেকে এমএলএআর পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মাধ্যমে দুদকের মানিলন্ডারিং বিভাগ থেকে এমএলআর পাঠানো হবে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করা অর্থের বিষয়ে আরও তদন্ত প্রয়োজন।
অন্যদিকে এ বিষয়ে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকারের কাছে জানতে চাইলে সাঈদের বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।
তবে মামলার তদারককারী কর্মকর্তা দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে এমএলআর পাঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও এখনো পাঠানো হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা দেরি হতে পারে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মমিনুল হক সাঈদ মালয়েশিয়ার রিসোর্ট ওয়ার্ল্ড বারহার্ড (আরডব্লিউবি) ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংক হিসাবে ৬৮ হাজার ৫০০ মালয়শিয়ান রিঙ্গিত পাচার করেন সাঈদ। যার হিসাব নম্বর-২০৯৬০০৪৯১।