চুনারুঘাটে শশুর জামাই কারাগারে জালিয়াতির অভিযোগে -দলিল লিখকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মোঃ জসিম মিয়া চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি- জালিয়াতির মাধ্যমে জনৈক আছকিরাকে দাতা সাজাইয়া আছকিরার ছবি পরিবর্তন করে অন্য নারীর ছবি বসিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করার অভিযোগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে দলিল লিখক সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে আছকিরা নামে জনৈক নারী । মামলার আসামিরা হলেন,দলিল লেখক আব্দুল মজিদ খান, (৬০) নালমুখ বাজা জামে মসজিদের ইমাম জালাল উদ্দিন (৪০) তার শশুর বড়আব্দা গ্রামের আব্দুল্লাহ (৬০), সৈয়দ আফরোজ মিয়া (৪৫), মো: খলিলুর রহমান (৪৮) । মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজস করে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৪ সালে দলিল তৈরী করেন। এর পর মামলার বাদিনী আছকিরা খাতুন ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারী হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে সিআইডি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সিআইডি পুলিশ তদন্ত শেষে ঘটনার দীর্ঘ ১১ মাস পর গত ২৯ নভেম্বর প্রতিবেদ দাখিল করেন। এর পর আদালত কর্তৃক ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়া ইস্যু হয়। এর মধ্যে গত ১২ মার্চ জামাতা জালাল উদ্দিন, শশুর আব্দুল্লাহ ও দলিলের সাক্ষী খলিল সহ ৩জন জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর মধ্যে দলিল লিখক ও আফরোজ মিয়া পলাতক রয়েছেন। জানা যায়, উপজেলার বড়াব্দা গ্রামের মৃত ইয়াকুব উল্লার পুত্র আব্দুল্লার কাছ থেকে একই ইউনিয়নের পুর্ব পরাজার গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের মেয়ে মোছাঃ আছকিরা খাতুন ১৯৯৩ সনে বড়াব্দা মৌজার আর এস ৪৪ নং খতিয়ানের ২৯ নং দাগে ৩২ শতক ও ২৫ নং দাগে ৪ শতক মোট ৩৬ শতক জমি ক্রয় করেন। যার দলিল নং ১৪০৪/৯৩। যাহা বিগত সেটেলমেন্ট জরীপে আছকিরা খাতুনের নামে ওই জমি রেকর্ডভূক্ত হয়। এর কিছু দিন পরেই জমি বিক্রেতা আব্দুল্লার ওই জমি জালিয়াতির মাধ্যম নিজ নামে নিয়ে ভূয়া দলিল তৈরী করেন । ভুয়া দলিল নং- ৪৫১৬/১৪ইং। আছকিরা ভূয়া দলিলের নকল কপি সংগ্রহ করে গত বছরের ৯ জানুয়ারী ২০২৩ হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি সিআইডির অনুসন্ধান অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি হয়। মামলার বাদিনী এসব তথ্য নিশ্চিত করে রবিবার ১৭ মার্চ আছকিরা বলেন, আমাকে দাতা সাজিয়ে আমার ছবির পরিবর্তে অন্য নারীর ছবি বসিয়ে ভূয়া দলিল তৈরী করায় আমি মামলা করেছি। আমি তাদের সঠিক বিচার চাই। হবিগঞ্জ সিআইডি পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক মো: আব্দুল বাছেত জানান, দীর্ঘ অনুসন্ধানে জালিয়াতি করে দলিল তৈরির বিষয়টি সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় আমি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এবিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা সাবরেজিস্টার নিতেন্দ্র লাল দাস জানান, ওই দলিল রেজিস্টার করার সময়ে আমি ছিলামনা আমার জানা নেই। এবিষয়ে দলিল লিখক আব্দুল মজিদ জানান, আব্দুল্লাহ তথ্য গোপন করায় এমন হয়েছে। তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমি আইনী ভাবে মোকাবিলা করবো। এদিকে একজন মসজিদের ইমাম এমন জালিয়াতিতে জড়িতর ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নালমূখ জামে মসজিদের এক মুসল্লী মর্তুজ সর্দার জানান, আমরা ওই হুজুরের পিছনে দাড়িয়ে নামাজ আদায় করি। কিন্তু মসজিদের হুজুর একজন প্রতারক! অন্যর জমি জালিয়াতিতে জড়িত ভাবতে অবাক লাগছে। মসজিদের দাতা সদস্য মনির মহালদার বলেন, ঘটনা সত্য হলে এমন হুজুরের পিছনে দাড়িয়ে নামাজ পড়া ঠিকনা।