চৌগাছার চাঞ্চল্যকর রাতুল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার-০১

চৌগাছার চাঞ্চল্যকর রাতুল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার-০১

ভিকটিমের মোবাইল, পরিহিত বস্ত্র ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ।

নিউজ ডেস্কঃ গত ইং ১২/০৭/২০২১ তারিখ বিকাল১৭:২৫ ঘটিকার সময় চৌগাছা থানাধীন লস্করপুর শ্মশান মাঠে পাটক্ষেত থেকে মুখে স্কসস্টেপ দ্বারা মোড়ানো ১৮ বছর বয়সী অজ্ঞাত যুবকের এক মৃত দেহ পেয়ে উদ্ধার করে চৌগাছা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে মৃতের আত্মীয়-স্বজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ও ছবি দেখে মৃতের মৃতদেহ সনাক্ত পূর্বক জানায় যে, উদ্ধারকৃত লাশের নাম এহতেশাম মাহমুদ রাতুল (১৮), পিতা-মোঃ মহিউদ্দীন, সাং-বাজিপোতা, থানা-মহেশপুর, জেলা-ঝিনাইদহ। সে মহেশপুর থানাধীন সামবাজার এম.পি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। ইং ১১/০৭/২০২১ তারিখ বেলা ১৪.৩০ ঘটিকার সময় বাড়ী থেকে বাহির হইয়া যাওয়ার পর সন্ধ্যা ১৯.০০ ঘটিকায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিলেও এরপর হইতে সে নিখোঁজ থাকে। এই ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের পিতা মহিউদ্দীন বাদী হইয়া অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানা যশোরে অভিযোগ দাখিল করিলে চৌগাছা থানার মামলা নং-০৮,তারিখঃ ১৩/০৭/২০২১ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪
পেনাল কোড রুজু হয়।

মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হওয়ায় জেলা পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার) পিপিএম মামলার তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখা, যশোর এর উপর ন্যাস্ত করেন। অফিসার ইনচার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা এর হাওলা মতে এসআই(নিঃ)/ মোঃ শামীম হোসেন বর্ণিত মামলার তদন্তভার গ্রহন করেন।

গ্রেফতার ও উদ্ধার অভিযানঃ
পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি), জনাব জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার “ক” সার্কেলে জনাব বেলাল হোসাইন গণ’দের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ জনাব রূপন কুমার সরকার, পিপিএম এর নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি’র এসআই (নিঃ) মোঃ শামীম হোসেন, সংগীয় এসআই (নিঃ) মোঃ মফিজুল ইসলাম, পিপিএম ও এএসআই (নিঃ) রঞ্জন সরকার, সঙ্গীয় ফোর্সসহ একটি চৌকস টিম গোপন সূত্রের ভিত্তিতে ইং ১৬/০৭/২০২১ তারিখ বেলা ১৩.৩০ ঘটিকার সময় সিএমপি বন্দর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী ও মূল হত্যাকারী ভিকটিমের ভগ্নিপতি শিশির আহম্মেদকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তি মতে একই দিন রাত ০৯.৩০ ঘটিকার সময় চৌগাছা থানা লস্করপুর শ্মশান মাঠে মামলা ঘটনাস্থলের অদূরে একটি পাটক্ষেত থেকে ভিকটিমের পরিহিত বস্ত্র ও হত্যা কাজে ব্যবহৃত স্কচটেপ ও হ্যান্ড গ্লভস্ এবং একই তারিখ ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানাধীন কাশিপুর সাকিনে ধৃত আসামীর বসতবাড়ী হইতে অত্র মামলার ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

হত্যার কারণ ও অপরাধ সংঘটনের প্রক্রিয়াঃ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তদন্তে প্রাপ্ত ধৃত আসামী শিশির আহম্মেদ (২১), পিতা-মোঃ হায়দার আলী মন্ডল, স্ত্রী-মাহমুদা মমতাজ মীম, সাং-কাশিপুর, থানা-কোটচাঁদপুর,জেলা-ঝিনাইদহ
অত্র মামলার ভিকটিমের আপন ভগ্নিপতি। ধৃত আসামীর শ্বশুর একদিন বাড়ীতে ডেকে এনে অপমান অপদস্থ করলে রাগে ক্ষোভে সেই থেকে তার একমাত্র ছেলে (ভিকটিম) কে মেরে
ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিমকে তার ভগ্নিপতি আসামী শিশির আহাম্মেদ মোবাইল ফোনে (ভিকটিমের বোনের ফোন দ্বারা) ডেকে নিয়ে মামলার ঘটনাস্থলে গিয়ে গাঁজা সেবন ও কোমল পানীয় মজো এর মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে ভিকটিমকে খাওয়াইয়া অজ্ঞান করতঃ আসামী শিশির আহাম্মেদ ভিকটিমের নাক মুখে স্কচ ট্যাপ দ্বারা মোড়ায়ে ভিকটিমের শ্বাসরোধ করতঃ ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে অত্র মামলার ঘটনাস্থলে লাশ গুম করার জন্য ফেলে রাখে ও ভিকটিমের গায়ের কাঁপড় খুলে ঘটনাস্থলের পাশে আরেকটি পাট ক্ষেতে ফেলে রাখে এবং ভিকটিমের মোবাইল টি সিম খুলে আসামীর বসত কক্ষে ইটের নীচে পুতে রাখে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানাঃ
১। শিশির আহম্মেদ (১৯), পিতা মোঃ হায়দার আলী মন্ডল, মাতা-মিসেস রুনা লায়লা, সাং-কাশিপুর, থানা-কোটচাঁদপুর, জেলা-ঝিনাইদহ ।

উদ্ধারকৃত আলামতঃ
১। ভিকটিমের মোবাইল ফোন।
২। ভিকটিমের পরিহিত বস্ত্র
৩। আসামীর মোবাইল ফোন।
৪। হত্যার কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।

“ বাংলাদেশ পুলিশের শপথ-দেশের মানুষকে রাখবো নিরাপদ,
সত্য উদঘাটনে বদ্ধ পরিকর, যশোর জেলা পুলিশ ”।