দেবহাটায় নির্মানের কয়েক ঘন্টা পর ভেঙে পড়লো সরকারী বরাদ্দে নির্মিত ড্রেন

দেবহাটায় নির্মানের কয়েক ঘন্টা পর ভেঙে পড়লো সরকারী বরাদ্দে নির্মিত ড্রেন
……………………………………………………….

দেবহাটা প্রতিনিধি : দেবহাটার সখিপুরে নির্মানকাজ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ভেঙে পড়েছে সরকারি বরাদ্দে নির্মিত পানি নিষ্কাশনের পাকা ড্রেন।

উপজেলার উত্তর সখিপুর বাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী এলাকায় জনৈক নজরুলের বাড়ী থেকে শহিদুলের বাড়ি গামী ওই পাকা ড্রেনটির নির্মানকাজ রবিবার সন্ধ্যায় শেষ হলে রাতের যেকোন সময়ে সেটি ভেঙে মুখ থুবড়ে পড়ে।

২০২১-২১ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ওই ড্রেনটি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের দূর্নীতি-অনিয়ম এবং উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের চরম ঔদাসীনতার ফলেই নির্মান শেষ হওয়ার পরপরই ভেঙে পড়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে উত্তর সখিপুর বাজারসহ আশপাশের এলাকার মানুষ বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারী ড্রেন না থাকায় চরম দূর্ভোগে ভুগছিল।

এমতাবস্তায় জনস্বার্থে চলতি অর্থ বছরে এডিপি প্রকল্প থেকে উত্তর সখিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে একটি সরকারী ড্রেন নির্মানের জন্য ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে টেন্ডার আহ্বান করা হয়।

অনলাইন টেন্ডারের কারসাজিতে ড্রেনটি নির্মানের কাজ পান কলারোয়ার মহিদ এন্টার প্রাইজের মালিক মহিদুল ইসলাম। এরপর তিনি মুনাফার মৌখিক চুক্তিতে কাজটি দেবহাটার অন্যতম দূর্নীতিবাজ ঠিকাদার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের আবুল কালামের কাছে বিক্রি করে দেন।

গত ২৯ মে ঠিকাদার আবুল কালাম ড্রেনটির নির্মান কাজ সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতনের উপস্থিতিতে শুরু করেন। কিন্তু কাজের উদ্বোধন শেষে চেয়ারম্যন চলে যাওয়ার পরপরই ঠিকাদার আবুল কালামের নির্দেশে কর্মরত শ্রমিকরা নির্মান কাজে দূর্নীতি ও অনিয়ম শুরু করেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

তারা জানান, এলজিইডি’র সেলিম হোসেনকে ম্যানেজ করে নির্মান কাজের শুরুতেই নিন্মমানের খোয়া, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ড্রেনের নিচের অংশে নির্ধারিত ৩ ইঞ্চির পরিবর্তে নিজেদের ইচ্ছেমতো সিসি ঢালাই দেয় ঠিকাদার আবুল কালাম। তারা ড্রেনের দুপাশে ৬ফুট উচু দেয়াল নির্মানেও খেয়াল খুশি মতো নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার শুরু করে। ড্রেনটির মুল দৈঘ্যের সারি সারি ইটের গাথুনিতে সিমেন্টের তুলনায় দেয়া হয় মাত্রাতিরিক্ত বালু।

দুপাশের উচু দেয়ার ধরে রাখতে দেয়া হয়নি কংক্রিটের ঢালাইকৃত কোন পিলার। একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দূর্নীতিবাজদের ওই নির্মান কাজের প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকেও সেখান থেকে হটিয়ে দেয় ঠিকাদার কালামের লোকজন।

রবিবার (৬জুন) সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে তড়িঘড়ি করে নির্মান কাজ শেষে প্লাস্টিকের পলিথিন দিয়ে ড্রেনটি ঢেকে দিয়ে চলে যায় ঠিকাদার কালাম ও নির্মান শ্রমিকরা। এরপর রাতের যেকোন সময়ে সদ্য নির্মিত ড্রেনটি ভেঙে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় বলে জানায় এলাকাবাসী।

দূর্নীতিবাজ ঠিকাদার আবুল কালাম বলেন, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে দেয়া ডিজাউনে ত্রুটি থাকায় হয়তো ড্রেনটি ভেঙে পড়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ড্রেনটি ভেঙে পড়ার খবর পেয়েছি। ঠিকাদার আবুল কালামকে ইটগুলো আবার গেঁথে দিতে বলা হয়েছে।

নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তার বলেন, ড্রেন ভেঙে পড়ার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *