নওগাঁর মান্দায় আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মাঝি হতে চান অনেকেই, বিএনপি থেকে কয়েকজন

সোহেল রানা নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁ মান্দায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান অনেকে।জানা গেছে, আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের সমর্থকরা। মাঠপর্যায়ে অবশ্য এখন পর্যন্ত তাঁদের অনুসারীদের মধ্যে প্রকাশ্য কোন্দল দেখা যায়নি।

অপরদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কম থাকায় সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিএনপি।সাবেক এমপি মারা যাওয়ায় একজন যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতাকে হারিয়েছে উপজেলা বিএনপি।যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সকলকে সুংগঠিত করে নেতাকর্মী ও দলকে চাঙ্গা রাখাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ মান্দা উপজেলা বিএনপির।

গত (৩০ জানুয়ারি) বিএনপির সাবেক (এমপি) শামসুল আলম প্রামানিক মারা যায়।

জানা গেছে, বিএনপির নির্বাচনের মাঠে মনোনয়ন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন এখন পর্যন্ত দুইজন।তারা হলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র দলের আহ্বায়ক এম এ মতিন।

এছাড়াও দলটির একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান মকে এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে পারে।মান্দায় দলীয় সকল কর্মসূচিতে দীর্ঘদিন থেকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে পক্ষ বিপক্ষ।রয়েছে দলীয় কোন্দল।দলে থেকে নেতার হয়ে, “ভাইকেন্দ্রিক” রাজনীতি করছেন অনেক কর্মী।এতে করে দলীয় প্রোগ্রামগুলোতে বক্তব্য দেওয়া, সামনের সারিতে দাঁড়ানো, সেলফি তোলাসহ এসব সামান্য বিষয় নিয়ে প্রায় হট্টগোল বেঁধে যায়।এর ফলে দলীয় মিটিং মিছিলে এসে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা পড়েন চরম বিলম্বনায়।যার ভাইয়ের ডাপট বেশি সে রাজা।

জানা গেছে, মান্দা ৪ আসনে কোন পৌরসভা নেই।এ উপজেলায় ইউনিয়নের সংখ্যা ১৪টি।মোট ভোটার ২ লক্ষ ৮৯ হাজার ২২৬ জন।এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৪১০জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮১০ জন।

এ আসনে ১৯৯১ সালে জামায়াত থেকে নাসির উদ্দিন সংসদে যান এরপর ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে শামসুল আলম প্রামানিক জয় লাভ করে সংসদে যান, ২০০১সালে বিএনপি থেকে আবারও শামসুল আলম প্রামানিক নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন।

এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগে থেকে নৌকা মার্কা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে কলস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মুহা: ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক।সে সময় তার কলস মার্কার কাছে হেরে যান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক প্রার্থী শেখ মোঃ আব্দুল লতিফ।

এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকা মার্কা নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন মুহা.ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক।২০১৪ সালের নির্বাচনে নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতি সম্পাদক ও মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ব্রহানী সুলতান মামুদ গামার নাম টিভিতে দেখা গেলে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ হয়।এরপরে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে আবার তা বদলে মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিকের নাম ঘোষণা আসে এবং তিনি এমপি নির্বাচিত হন।এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক আবারও সংসদে যান।

আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেতে আগ্রহী অনেকে।এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের জন্য এলাকায় এখন পর্যন্ত আলোচনায় রয়েছে ৫ জন।

তারা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য প্রবীণ রাজনীতি ব্যক্তিত্ব মুহা: ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ মো: আব্দুল লতিফ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ব্রহানী সুলতান মামুদ গামা, উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ্যাড: নাহিদ মোর্শেদ বাবু।

গুঞ্জন রয়েছে এবারের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এমপি পুত্র সুজা উদ-দৌলা প্রামানিক বিপ্লব মনোনয়ন চাইবেন আর সে কারণে তিনিও মান্দায় সময় দিচ্ছেন কাজ করছেন নেতাকর্মীদের নিয়ে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা মাহবুব বাচ্চু ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানও থাকতে পারে মনোনয়ন দৌড়ে।অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা ছিলেন, এখনো তাদেরকে মাঠে তেমন প্রচার প্রচারণা করতে দেখা যায়নি।

এছাড়াও কর্মীরা তাদের পছন্দের নেতাকে এমপি হিসেবে দেখতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টেলিভিশন লাইভ ও বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে জোরালো প্রচার চালাচ্ছেন।

অপরদিকে হঠাৎ বিএনপির সাবেক এমপি শামসুল আলম প্রামানিকের মৃত্যুর পর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টিভি লাইভে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছেন।

বিএনপির একটি সূত্র জানান, যারা এতদিন লড়াই সংগ্রাম করে দলকে ধরে রেখেছে সেইসাথে ত্যাগী, কর্মীবান্ধব, বিগত দিনে লড়াই সংগ্রামে সবসময় ছিল এমন নেতাদের সামনে নিয়ে আসার জন্য ঘরোয়া মিটিংগুল