পটুয়াখালীতে ১৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার।

 

মোঃহাফিজুল ইসলাম শান্ত স্টাফ রিপোর্টঃ

পটুয়াখালীতে ১৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। প্রতি বছর কলাগাছ, বাঁশের কঞ্চি ও সাদা কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে ওই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালন করে আসছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে না ভাষার সঠিক তাৎপর্য, জানাতে পারছেনা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। আগামী মঙ্গণবার ২১ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এদিন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে।
আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের অভাবে উপজেলায় পালন করে কিন্তু বিচ্ছিন্ন ও দূরের অনেক প্রতিষ্ঠানে এই দিবস পালন করা হয়না। সরকারি তহবিল বরাদ্দ না থাকায় ও ম্যানেজিং কমিটির অবহেলার কারণে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৫টি, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬টি, মাদ্রাসা ১৯টি ও কলেজ ৪টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬টি, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৩টি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে। অন্যদিকে ১৩৯টি প্রাথমিক, ১৩টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ১৯টি ও কলেজ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে বিপাকে পরতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
২২নম্বর গুলি আউলিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরমিনা জাহান, হাফিজা বেগম ও তানহা এবং ৪র্থ শ্রেনীর রাইসুল ইসলাম ও ইয়াসিন আরাফাত জানান, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। আমরা সবাই প্রতি বছর কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানাইয়া শ্রদ্ধা জানাই। আমরা চাই স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হউক। একইভাবে দশমিনা সরকারি আব্দুর রসিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী নাদিয়া, স্বর্না, রাকিব, সুমাইয়া ও শাকিলসহ অনেকে বলেন তাদের কলেজেও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হউক।
এএদিকে, সরকারের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের সাথে শহীদ মিনার নির্মাণের জোর দাবী জানান শিক্ষকদের দাবী নতুন
এবিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি দশমিনা উপজেলা শাখার সভাপতি ও ২২নম্বর গুলি আউলিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান জানান, উপজেলার ৬টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রাথমিক কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভাষা শহীদের ইতিহাস ও সম্মান জানাতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ দরকার। সরকারের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের সাথে শহীদ মিনার নির্মাণের জোর দাবী জানান। একইভাবে দাবী করেন আউলিয়াপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১৩টি মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে।
এবিষয়ে দশমিনা একাডেমিক সুপার ভাইজার মু. নেছার উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ৪৯টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক, মাদ্রসা ও কলেজ পর্যায়ে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ১৩টিতে। এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আল মামুন ( ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ১৪৫ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার রয়েছে মাত্র ৬টিতে। এতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলাপ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।