প্রতারক চক্রের প্রধান বাদশা মিয়াকে নিয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

প্রতারক চক্রের প্রধান বাদশা মিয়াকে নিয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

নিউজ ডেক্স:

সাতক্ষীরার শীর্ষ প্রতারক বাদশা মিয়ার আটকের বিষয় নিয়ে পুলিশের প্রেসব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উক্ত প্রেসব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এ সময় সাংবাদিকদের জানান, আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের প্রধান বাদশা মিয়ার কোন বৈধ পেশা নেই। প্রতারনা করে মানুষের নিকট থেকে অর্থ আদায় করায় তার মূল ব্যবসা ও পেশা। তিনি কোন ডাক্তার না হয়েও নিজেকে ডাঃ এসএম বাদশা মিয়া, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পি.এস, প্রধান মন্ত্রীর মামলা পরিচালনাকারী, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর, ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা, বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপিদের পরিচয় দিয়ে তাদের সিল, প্যাড, ডিও লেটার, বাণী ইত্যাদি ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে চাকুরী পাইয়ে দেয়া, চাকুরীতে পদোন্নতি, চাকুরীর বদলী, মামলার রায় পাইয়ে দেয়া, জমিজমা উদ্ধার ও দখল ইত্যাদির প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই মহা প্রতারক। এ সকল কাজের জন্য তিনি দেশী ও বিদেশী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, এমপিসহ অনেকের ছবি সংগ্রহ করে তাদের ছবির সাথে নিজের ছবি লাগিয়ে (এডিট করে) নিরীহ মানুষের নিকট নিজেকে বিশ^াসযোগ্য ও প্রভাবশালী হিসেবে উপস্থাপন করে থাকেন। সরকারের প্রভাবশালী আমলা, প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট মিথ্যা পরিচয়ে তদবীর করে থাকেন এবং তদবীর না শুনলে বদলী বা চাকুরীচ্যুত করার হুমকি ধামকি দিয়ে থাকেন। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিচয় দিয়ে দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় কমিটি গঠন করে তাদের নিকট বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন জনৈক শফির মুদি দোকানের সামনে থেকে প্রতারক বাদশা মিয়াকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড তাজা গুলি, ৩ টি জাল সীল। (সিল গুলো যাদের তারা হলেন, ১. শেখ ফজলুল করিম সেলিম এম.পি, ২. এসএম বাদশা মিয়া, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ৩. ডাঃ মোস্তফা জামান, সাধারন সম্পাদক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার কেন্দীয় কমিটি।) পুলিশ প্রধানের কাছে লেখা শেখ সালাউদ্দীন জুয়েলের একটি ডিও লেটার, প্রধান মন্ত্রীর একান্ত সচিবের অফিসিয়াল নোট প্যাড একটি, মানবাধিকার প্রতিদিন প্রত্রিকার স্টিকার একটি, ভুয়া ওয়ারেন্ট ২৫টি, মসজিদের চাঁদা আদায়ের রশিদ বই ২০টি, আদায়কৃত চাঁদার ৬৮ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন আলামত। প্রেসব্রিফিং-এ তিনি আরো জানান, এ সময় তার সহযোগী সাগর নামের আরো এক জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলাসহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *