মোঃ হাফিজুল ইসলাম শান্ত স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ২ সন্তানের জননীকে মারধর করার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লা বাড়িতে। আহত গৃহবধূ মোসা. আসমা বেগম (২৩) হচ্ছেন পানপট্টি ইউনিয়নের কোকাইতবক গ্রামের আব্দুল রশিদ হাওলাদারের মেয়ে এবং মো. সবুজ মোল্লার স্ত্রী। মো. সবুজ মোল্লা (৩৫) হচ্ছেন গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের সেরাজ মোল্লার ছেলে। আহত গৃহবধূ মোসা. আসমা বেগম জানান, আমার বাবা সবুজ মোল্লার সাথে আমাকে বিবাহ দেন। বিবাহের পর আমার গর্ভে ২টি সন্তান জন্ম নেয়। বিবাহের পর থেকেই আমার স্বামী আমাকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মারধর করত। আমি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আমার বাবা, মা ও ভাইদের কাছে কোনদিন কিছুই বলি নাই। সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করেছি। দেখি আমার স্বামী ভাল হয়ে যায় কিনা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমার স্বামী আজো বদলায় নি। বরং আমাকে নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আজ রবিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আমার ঘরের উত্তর পাশে গোয়াল ঘরে গরুর দুধ দোহানের পরে গরুর দুধ কম হওয়ায় আমার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং পুনরায় যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিয়ে আমাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে আমাকে গুরুতর আহত করে। আমার ডাক চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন এসে পড়লে আমার স্বামী আমাকে রেখে চলে যায়। এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মো. নুরু উদ্দিন বলেন, আসমা বেগম আমার চিকিৎসাধীনে ৩য় তলায় ১৬নং বেডে ভর্তি আছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলাজখম ও কালো কালো দাগ আছে। এ বিষয়ে আসমা বেগমের মা নুরজাহান বেগম বলেন, আমার মেয়েকে ওরা মারধর করেছে। শুনেছি প্রায়ই ওকে মারধর করত। কিন্তু আমার মেয়েটা সব মুখ বুঝে সহ্য করেছে। আমি এর বিচার চাই। এ বিষয়ে আসমা বেগমের বড় ভাই আব্দুল রব বলেন, আমার বোনকে বিবাহ দেয়ার পর থেকেই যৌতুকে জন্য প্রায়ই মারধর করত। আমি লোকমুখে মারধরের খবর জানলেও আমার বোন আমাদেরকে কিছুই বলে নাই। এখন আমার বোনকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। যাতে কোন স্বামী যেন এভাবে তার স্ত্রীকে অমানবিক নির্যাতন না করে। এ বিষয়ে সবুজ মোল্লা কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে গলাচিপা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু বলেন, বিষয়টি শুনেছি। দু’পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মীমাংসার ব্যবস্থা করব। গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শোণিত কুমার গায়েন বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply